হে প্রিয় ত্বলিবুল ইলম ভাই! আপনি যদি সত্যিই একজন ত্বলিবুল ইলম হতে চান এবং দ্বীনের ন্যুনতম জ্ঞানের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চান তাহলে নিম্নোক্ত বিষয় ও বইগুলো আপনার জন্য। প্রথমে ছোটো থেকে শুরু করবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে শেষ করবেন। তাহলে চলুন আজকের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস জানা যাক-
𒆜 এক. একজন ত্বলিবুল ইলমের জন্য প্রথম এবং আবশ্যিক কাজ হলো পবিত্র কুরআন বিশুদ্ধভাবে তাজবীদসহ তিলাওয়াত শেখা। এটা তিলাওয়াতান এবং ইতকানান শিখতেই হবে। এরপর সাধ্যানুযায়ী কুরআন হিফজ করা।
বিশুদ্ধভাবে তাজবীদ শিখতে তুহফাতুল আতফাল পড়তে পারেন। এটা আপনাকে কুরআন মুখস্থ করতে এবং তার হক্ব আদায় করে পড়তে সার্বিকভাবে উপকৃত করবে।
সাথে সাথে অনুবাদ ও তাফসীর পড়তে হবে। এক্ষেত্রে তাফসীর সাদী একটা সুন্দর প্যাকেজ বলা যায়। তবে বাংলা ভাষায় সহজ অনুবাদ ও তাফসীরের জন্য তাফসীর জাকারিয়া পড়তে পারেন।
𒆜 দুই. আক্বীদা। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয়। ত্বলিবুল ইলমের জন্য আক্বীদা বিষয়ে সার্বিক জ্ঞান রাখার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে আক্বীদার বই থেকে-
১. আল-ক্বাওয়াঈদুল আরবাআহ
২. আল-উসূলুছ ছালাছাহ
৩. কিতাবুত তাওহীদ
৪. কাশফুশ শুবহাত
৫. আক্বীদাহ ওয়াসেতিয়্যাহ
৬. হামাভিয়্যাহ এর মুখতাছার
৭. আক্বীদাহ তহাবিয়্যাহ
এগুলো সিরিয়াল করে পড়তে পারলে সবচেয়ে ভালো।
𒆜 তিন. হাদীস ও উসূলে হাদীস। কুরআন ও আক্বীদার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হাদীসের বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের বিকল্প নেই। হাদীসের জ্ঞান ত্বলিবুল ইলমের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে। এবং হাদীসের গূঢ় নিবিড় জ্ঞানের জন্য উসূলে হাদীস জানা আবশ্যক। এক্ষেত্রে-
হাদীস:
১. হাদীসে আরবাঈন ইমাম নববী
২. ঊমদাতুল আহকাম
৩. বুলুগুল মারাম
৪. বুখারী ও মুসলিমের হাদীস গুলো অনুবাদ করে পড়বে এবং বুঝবে।
উসূলে হাদীস:
১. তাইসীর মুসতলাহুল হাদীস
২. নুখবাতুল ফিকার
৩. আল বাঈছুল হাছীছ ব্যাখা আহমাদ শাকের
৪. তাদরীবুর রাভী।
𒆜 চার. ত্বলিবুল ইলমদের নিকটে একটি কঠিন বিষয় হলো ফিক্বহ ও উসূলে ফিক্বহ। অথচ মাসআলা মাসায়েলের জ্ঞান একজন শিক্ষার্থীকে অপর শিক্ষার্থী থেকে তাময়ীয করে। উভয়ের মাঝে অপেক্ষাতর ভালো জ্ঞান রাখে এই দিক নির্ধারণ করে দেয়। এক্ষেত্রে-
ফিক্বহ:
১. আদাবুল মাশয়ি ইলাস সলাহ
২. যাদুল মুসতাকনে’
উসূলে ফিক্বহ:
১. আল উসূল মিন ইলমিল উসূল
২. আল ওরাকাত ইমাম জুওয়ায়নী
৩. ওরাকাত এর ব্যাখা ইমাম মাহাল্লী
𒆜 পাঁচ. উপরোক্ত সকল বিষয় এবং পরবর্তীতে উল্লেখিত সকল বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হলে আরবী ব্যাকরণের জ্ঞান অর্জন অত্যাবশ্যক। আরবী ব্যাকরণ এমন একটি বিষয় যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানতে হয়। যা অন্য বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে আবশ্যক না। এক্ষেত্রে-
১. আজরুমিয়্যাহ
২. আন নাহু তাতবীকী/ ওয়াজেহ
৩. আলফিয়্যাহ ইবন মালেক।
৪. কায়ফা তুতকিনু নাহু / সরফ।
𒆜 ছয়. সীরাহ নাবাবিয়্যাহ। ত্বলিবুল ইলমের জ্ঞানে ভারসাম্য আনতে সীরাহ জানার বিকল্প নেই। পাশাপাশি দালায়েল শামায়েল জানতে হবে। তাহলে কথাবার্তা ও দ্বীনের কাজে পরিপক্বতা আসবে। এক্ষেত্রে-
১. আল ফূসুল ফী সীরাতির রাসূল
২. আর রাহীকুল মাখতুম
৩. সীরাহ ইবনু হিশাম এর তালখীস
৪. আস সীরাহ আন নাবাবিয়্যাহ শায়খ রিযকুল্লাহ।
৫. শামায়েল তিরমিযী।
৬. দালায়েল নুবুও্যাহ।
এছাড়া ত্বলিবুল ইলমের আদব আখলাক এর জন্য নিয়মিত পড়তে হবে হিলয়াহ ত্বলিবুল ইলম। ব্যাখা পড়তে পারলে ভালো। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সত্যিকারের ত্বলিবুল ইলম হিসেবে কবুল করুন। আমীন! বারাকাল্লাহ ফিকুম!
اللهم إنا نسألك علما نافعا ورزقا طيبا وعملا متقبلا.
লেখা: উস্তাজ আব্দুল হাকীম
ট্রেন যাত্রাপথে ঢাকা থেকে গাইবান্ধা।
তারিখ: ১৭/০১/২০২৪। বুধবার।